প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে পেরেছেন। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে মিউনিখের হোটেল বার্গারহাউস গার্চিং-এ জার্মানিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত সরকারপ্রধানকে দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের পর এখন আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা ও স্বাধীনতার সুফল  ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে তার সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি।

বিএনপিকে লুটেরাদের দল আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই দল জনগণের কল্যাণে কিছুই করে না, বরং নিজেদের ভাগ্য গড়ে তোলে। তারা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মানুষকে পুড়িয়ে মারার কারণে পরাজয়ের ভয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। কারণ তারা জানে যে জনগণ তাদের ভোট দেবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন সামরিক স্বৈরশাসকের দ্বারা গঠিত দলটি সবসময় এজেন্সিতে বিশ্বাস করে এবং তাদের সাহায্য ছাড়া তারা কিছুই করতে পারে না। এসময় বিএনপিকে হ্যাঁ/না ভোট এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ধ্বংস করার জন্য দায়ী করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। তবে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে ভোটের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য। গত সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ বিশেষ করে নারীরা অবাধে ভোট দিয়েছে।

তিনি বলেন, এবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় না বসালে ২০০৯ সাল থেকে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ শাসনামলে যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, তা নষ্ট হয়ে যেত। লুটেরা (বিএনপি) সব লুট করে নিতো।

এসময় তিনি বলেন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতিতে বিরাট কাজে লাগে। ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

টানা চার বারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। আমি শুধু সেইটুকু চাই, কেউ যেন আবার এই দেশকে কখনো পেছনে না নিতে পারে। আবার যেন রাজাকার খুনিদের দেশ যেন না বানায়।

সরকার প্রধান বলেন, আমরা যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা দিয়েছি, সেই অনুযায়ী আমরা বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। ২০৪১ সালে বাংলাদেশের উন্নত সমৃদ্ধি স্মার্ট বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গঠন করে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করব, এটাই আমার প্রতিজ্ঞা।

আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত দলগুলোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের আগেও বলেছে, আন্দোলন করে নাকি আমাদের সরকার উৎখাত করবে। তো আন্দোলন করতে করতে সরকার উৎখাত দূরের কথা, জনগণের ভোট যেন আরও কয়েকগুণ বেশি পেল (আওয়ামী লীগ)। এখন আবার হুমকি-ধমকি দিচ্ছ। আর আমাদের কিছু খুচরা পার্টি আছে তারা লাফায়।

শেখ হাসিনা বলেন, গণভবনে তো আপনারা যান। গণভবনে গরু ছাগল হাঁস মুরগি সব আছে, বাগান আছে, সবকিছু তৈরি হয়। তো আমার একটা ছাগলের তিনটা বাচ্চা হইছে। এখন দেখি দুইটা বাচ্চা দুধ খায়। আরেকটা তিড়িং বিড়িং করে শুধু লাফায়। আমাদের দেশেও রাজনৈতিক দল কিছু আছে। একজন যদি কথা বলে তো তারা তিড়িং বিড়িং করে লাফায়। কিন্তু আসলে কিছুই করতে পারে না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, এখানে আরেক মজার ব্যাপার হচ্ছে, একেবারে অতি বাম অতি ডান তারা আবার একসঙ্গে হয়ে যায়। প্রশ্ন করলে বলে, আমরা তো একসঙ্গে হইনি। আরেক দিকে মুখ করে ছিলাম। কিন্তু আপনারা দেখেন, ওদিকে কমিউনিস্ট পার্টি এদিকে জামায়েত ইসলামী থেকে শুরু করে, সব আবার খুব আদর্শবাদী কথা, বিপ্লব করবে, সব হবে৷ বিপ্লব করতে করতে তারাও… হওয়ার পথে। আরেক দিকে বিএনপির অবস্থা তো আপনারা জানেনই।

মাদক সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান সরকার প্রধান।

অনুষ্ঠানে তিনি প্রবাসীদের ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর আহ্বান জানান।